এই নিবন্ধটি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড ২০২৩ সম্পর্কে। আমরা আপনাকে স্কোয়াড তালিকা এবং বিশ্লেষণ জানাব।
বিপিএলের আগামী আসর সামনের বছর ৫ জানুয়ারী শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে ৭ টি দলই নিজেদের গুছিয়ে ফেলেছে স্থানীয় এবং বিদেশী খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে। সম্প্রতি শেষ হওয়া বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে প্রতিভাবান সব খেলোয়াড়দের দলে নিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড ২০২৩-এ বেশ কিছু আকর্ষণীয় খেলোয়াড় রয়েছে, যার মধ্যে ভারতের একজন ক্রিকেটারও রয়েছেন। চট্টগ্রাম কখনো বিপিএল টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি, তাই এটি করতে হলে দলটির জন্য ভালো ক্রিকেট খেলার কোন বিকল্প নেই। এই নিবন্ধটি আপনাকে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড সম্পর্কে ধারণা প্রদান করবে ও টুর্নামেন্টে দলের পারফরম্যান্স অনুমান করতে সহায়ক হবে।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড ২০২৩
- আফিফ হোসেন (বাংলাদেশ)
- ভিশআ ফার্নান্দো (শ্রীলঙ্কা)
- আশান প্রিয়াঞ্জন (শ্রীলঙ্কা)
- কার্টিস ক্যাম্পার (আয়ারল্যান্ড)
- মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী (বাংলাদেশ)
- শুভাগত হোম (বাংলাদেশ)
- মেহেদী হাসান রানা (বাংলাদেশ)
- ইরফান শুক্কুর (বাংলাদেশ)
- মেহেদী মারুফ (বাংলাদেশ)
- জিয়াউর রহমান (বাংলাদেশ)
- ম্যাক্সওয়েল প্যাট্রিক (নেদারল্যান্ডস)
- উনমুক্ত চাঁদ (ভারত)
- তাইজুল ইসলাম (বাংলাদেশ)
- আবু জায়েদ রাহী (বাংলাদেশ)
- ফরহাদ রেজা (বাংলাদেশ)
- তৌফিক খান (বাংলাদেশ)
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড ২০২৩: ব্যাটসম্যান
চট্টগ্রাম দলের ব্যাটিং এ মূল দায়িত্ব নিতে হবে লোকাল প্লেয়ারদের। দলে এমন অনেক বাংলাদেশি খেলোয়াড় রয়েছেন যারা দলের ব্যাটিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। আফিফ হোসেন এদের মধ্যে অন্যতম ও উল্লেখযোগ্য একটি নাম। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ এবং ছোট্ট ক্যারিয়ারে ইতিমধ্যে ১৪২ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে আকর্ষণীয় ১২৪ স্ট্রাইক রেটে মোট ২৫২৭ রান করেছেন তিনি।
শুভাগত হোম একজন ভালো মানের অলরাউন্ডার যার বাংলাদেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে। নিজের দিনে যে কোন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম তিনি। আরেক তরুণ ও প্রতিভাবান খেলোয়াড় ইরফান সুক্কুর রয়েছেন চট্রগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দলে যিনি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি সার্কিটে বেশ কিছু ভালো নক খেলেছেন।
চট্রগ্রামের ব্যাটিং লাইনআপের অন্যান্য নাম হলো মেহেদী মারুফ, জিয়াউর রহমান এবং তৌফিক খান।
এঁদের প্রত্যেকেই সুযোগ পেলে দলের জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম। তবে এটি মানতে হবে যে, দলটির ব্যাটিং ইউনিটে লোকাল কোন বড় নাম নেই আফিফ ব্যতীত।
এবার চলুন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াডের কিছু বিদেশী ব্যাটারদের দিকে নজর দেওয়া যাক। উল্লেখযোগ্য বিদেশী খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় টপ-অর্ডার ব্যাটার উনমুক্ত চাঁদ। তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মোট ১৬০০ রান করেছেন এবং তাঁর আইপিএল খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আইরিশ অলরাউন্ডার কার্টিস ক্যাম্পারও স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত এবং তিনি সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দূর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছিলেন। ডাচ ওপেনিং ব্যাটার ম্যাক্সওয়েল প্যাট্রিক বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেন এবং তিনি চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইন আপে একটি মূল্যবান হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারেন। শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার আশান প্রিয়ানজনও দলের জন্য মূল্যবান একজন ব্যাটার।
এটি অবশ্যই বলতে হবে যে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড গঠনে অলরাউন্ডারদেরই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। তবে জেনুইন ব্যাটসম্যান ও বোলারের কিছুটা কমতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলটিতে।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড ২০২৩: বোলার
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ২০২৩ স্কোয়াডে অলরাউন্ডারের আধিক্য। তবে এর অর্থ এই নয় যে দলটিতে সামনের সারির কোন বোলার নেই। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দলে বাংলাদেশের দুইজন ফ্রন্ট লাইন ফাস্ট বোলার রয়েছে যাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আবু জায়েদ রাহি ও ফরহাদ রেজা জাতীয় দলের হয়ে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন এবং বিপিএলে খেলার দারুণ অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের।
অন্যদের মাঝে উল্লেখযোগ্য একটি নাম হলো বাংলাদেশ দলে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা সম্ভাবনাময় পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। শ্রীলঙ্কার পেসার ফার্নান্দোই মূলত চট্রগ্রামের পেস বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন এবং তিনি আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে তার যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। শ্রীলঙ্কার বাইরে টি-টোয়েন্টি লিগে এটিই তার প্রথম সুযোগ।
ফাস্ট বোলিংয়ে চট্টগ্রামের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হতে পারেন কার্টিস ক্যাম্পার, বিশেষ করে তাঁর সাম্প্রতিক ফর্ম চট্টগ্রামের দর্শকদের বড় স্বপ্ন দেখাতে পারে। জিয়াউর রহমানও মিডিয়াম পেস বোলিং করতে পারেন।
চট্রগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের স্পিন বোলিং আক্রমণ বহুমুখী। দলে আছেন তাইজুল ইসলামের মতো বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলা নিয়মিত স্পিনার। টেস্টে তাইজুলের ঝুলিতে ১৫৮ এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৭৫ উইকেট রয়েছে। শুভাগত হোম এবং শ্রীলঙ্কার প্রায়াঞ্জনও দলের প্রয়োজনে ভালো বোলিং করার ক্ষমতা রাখেন। এমনকি আফিফ হোসেনও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁর কার্যকরী অফ-স্পিন বোলিং এর মাধ্যমে উইকেট তুলে নিতে সক্ষম।
সামগ্রিকভাবে বলা যায় যে, চট্রগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দলের কাছে অনেক গুলো বোলিং অপশন রয়েছে যা তাদের ২০২৩ বিপিএলে ম্যাচ জয়ে সাহায্য করতে পারে।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড ২০২৩: চূড়ান্ত ভবিষ্যদ্বাণী
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দলে দারুন সব খেলোয়াড় রয়েছে, আছে একাধিক অলরাউন্ডারও। তবে দলটির একমাত্র বাধা অভিজ্ঞতার অভাব, কারণ তাদের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ের খুব বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড নেই। যদিও বেশির ভাগ ক্রিকেটারই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা দিয়েছেন, তবে তাঁরা এমন স্তরে নিজেদের নিয়ে যেতে পারে নি যে, আপনি তাঁদের থেকে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স আশা করতে পারেন।
আমাদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, চট্রগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ২০২৩ বিপিএলে প্লে-অফে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না।
সর্বশেষ খবর পেতে বিপিএল ২০২৩ দেখুন।